‘… প্রলয়-শিখা’ নামক এক কবিতা-পুস্তক প্রকাশ করিয়া রাজদ্রোহ অপরাধ করার সুপ্রসিদ্ধ কবি নজরুল ইসলাম প্রধান প্রেসিডেন্সি ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক ৬-মাস সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হইয়াছিলেন। অতঃপর তিনি হাইকোর্টে আপিল করায় জামিন-মুচলেকায় মুক্ত ছিলেন। গান্ধী-আরউইন-চুক্তির পর সরকারপক্ষ আপত্তি না করায় তাহাকে অব্যাহতি দেওয়া হইয়াছে।‘
’১৯৩০ সালে কাজী নজরুল ইসলামের প্রলয়-শিখা’ নামে একটি কবিতার বই প্রকাশ করি। ইচ্ছাকৃতভাবেই, গরম গরম কবিতা তাতে রাখা হয়। রাজদ্রোহের ভয়ে যেসব কবিতা পূর্বে কোন বইয়ে দেওয়া হয়নি, সেগুলি এবং কয়েকটি নয়া কবিতাও এতে সংযোজিত হয়। বর্তমান প্রকাশিত বইয়ে সেগুলোর সব নেই।‘
…আমরা জানিয়া অত্যন্ত আনন্দিত হইলাম যে, গভর্ণমেন্ট সম্প্রতি বই দুখানার [বিষের বাঁশী ও প্রলয়-শিখা] উপর হইতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করিয়াছেন। তবে ‘প্রলয়-শিখা’ সম্বন্ধে এই শর্ত দেওয়া হইয়াছে যে, ‘নব ভারতের হলদিঘাট’, ‘যতীন দাস’ ও ‘জাগরণ’-এই তিনটি কবিতা বাদ দিয়া বইখানা ছাপিতে হইবে। এটা ‘সর্বনাশের অর্ধেক ভালোর মতো ব্যাপার। ঐ তিনটি কবিতা যাঁরা কখনো পড়িয়াছেন, তাঁহারাই বুঝিবেন যে, ঐগুলি বাদ দিয়া ছাপিলে প্রলয়-শিখার মূল্য খুবই কমিয়া যাইবে। আমাদের মনে হয়, গভর্ণমেন্ট যখন গোটা বইটাকেই তাঁদের আইনের বেড়াজাল হইতে মুক্তি দিলেন, তখন ঐ তিনটি কবিতা নিয়াও তাঁরা অতঃপর মাথা না ঘামাইলে পারিতেন।…