১৯৩০-৩১ সাল। … এই সময়ে মোহাম্মদ কাসেম সাহেব ঢাকা থেকে গিয়ে আমাদের আস্তানায় উপস্থিত হন। কবি নজরুলের একখানা কবিতার বইয়ের পাণ্ডুলিপি সঙ্গে করে নিয়েই তিনি আমাদের ওখানে গিয়েছিলেন। নজরুল ইসলাম এর আগে যখন ঢাকায় ছিলেন, তখনই কিছু টাকার বিনিময়ে এই পাণ্ডুলিপিখানা কাসেম সাহেবকে হস্তান্তর করেন। অর্থের প্রয়োজন হওয়ায় মোহাম্মদী কাসেম কোনো প্রকাশকের কাছে পাণ্ডুলিপিখানা বিক্রি করার ইচ্ছা প্রকাশ করলে আমি তাঁকে সঙ্গে করে বৈঠকখানা রোডে এমদাদ আলী সাহেবের প্রেসে নিয়ে যাই। এমদাদ আলী সাহেব এককালে মাসিক ‘সহচর’ পত্রিকা বের করতেন এবং তারপর কয়েকখানা বই-পুস্তকও প্রকাশ করেন। তিনি নজরুলের বইখানা কিনতে রাজি হন এবং নগদ নয় শত টাকার বিনিময়ে আমরা তাঁকে পাণ্ডুলিপি প্রদান করি।
কবি তাঁর এই বইয়ের ‘নির্ঝর’ নাম দিয়েছিলেন এবং এতে মোট ১৪টি কবিতা ছিল। … পরে কয়েকবার উকিল (এমদাদ আলী) সাহেবের প্রেসে গিয়ে বইখানির কয়েকটি মুদ্রিত ফর্মা দেখার সুযোগ আমার হয়েছিল। কোন রহস্যজনক কারণে যে উকিল (এমদাদ আলী) সাহেব পাণ্ডুলিপির জন্যে নগদ নয়-শো টাকা প্রদান করে এই বই ছাপার পরও তা বাজারে বের করলেন না, তা জানার কোনো উপায় ছিল না।