কালবৈশাখী

বারেবারে যথা কালবৈশাখী ব্যর্থ হল রে পুব-হাওয়ায়,

দধীচি-হাড়ের বজ্র-বহ্নি বারেবারে যথা নিভিয়া যায়,

কে পাগল সেথা যাস হাঁকি–

‘বৈশাখী কালবৈশাখী!’

হেথা বৈশাখী-জ্বালা আছে শুধু, নাই বৈশাখী-ঝড় হেথায়।

সে জ্বালায় শুধু নিজে পুড়ে মরি, পোড়াতে কারেও পারি নে, হায়॥

কালবৈশাখী আসিলে হেথায় ভাঙিয়া পড়িত কোন সকাল

ঘুণ-ধরা বাঁশে ঠেকা দেওয়া ওই সনাতন দাওয়া, ভগ্ন চাল।

এলে হেথা কালবৈশাখী

মরা গাঙে যেত বান ডাকি,

বদ্ধ জাঙাল যাইত ভাঙিয়া, দুলিত এ দেশ টালমাটাল।

শ্মশানের বুকে নাচিত তাথই জীবন-রঙ্গে তাল-বেতাল॥

কালবৈশাখী আসেনি হেথায়, আসিলে মোদের তরু-শিরে

সিন্ধু-শকুন বসিত না আসি ভিড় করে আজ নদীতীরে।

জানি না কবে সে আসিবে ঝড়

ধুলায় লুটাবে শত্রুগড়,

আজিও মোদের কাটেনিকো শীত, আসেনি ফাগুন বন ঘিরে।

আজিও বলির কাঁসর-ঘন্টা বাজিয়া ওঠেনি মন্দিরে॥

জাগেনি রুদ্র, জাগিয়াছে শুধু অন্ধকারের প্রমথ-দল,

ললাট-অগ্নি নিবেছে শিবের ঝরিয়া জটার গঙ্গাজল।

জাগেনি শিবানী – জাগিয়াছে শিবা,

আঁধার সৃষ্টি – আসেনিকো দিবা,

এরই মাঝে হায়, কালবৈশাখী স্বপ্ন দেখিলি কে তোরা বল!

আসে যদি ঝড়, আসুক, কুলোর বাতাস কে দিবি অগ্রে চল॥