মার্শাল তিতোর প্রতি[১]

কমরেড, তুমি পাঠালে ঘোষণা দেশান্তরে,

কুটিরে কুটিরে প্রতিধ্বনি,—

তুলেছে মুক্তি দারুণ তুফান প্রাণের ঝড়ে

তুমি শক্তির অটুট খনি।

কমরেড, আজ কিষাণ শ্রমিক তোমার পাশে

তুমি যে মুক্তি রটনা করো,

তারাই সৈন্য: হাজারে হাজারে এগিয়ে আসে

তোমার দু’পাশে সকলে জড়ো।

হে বন্ধু আজ তুমি বিদ্যুৎ অন্ধকারে

সে আলোয় দ্রুত পথকে চেনা:

সহসা জনতা দৃপ্ত গেরিলা—অত্যাচারে,

দৃঢ় শত্রুর মেটায় দেনা।

তোমার মন্ত্র কোণে কোণে ফেরে সংগোপনে

পথচারীদের ক্ষিপ্রগতি:

মেতেছে জনতা মুক্তির দ্বার উদ্ঘাটনে:

—ভীরু প্রস্তাবে অসম্মতি।

ফসলের ক্ষেতে শত্রু রক্ত-সেচন করে,

মৃত্যুর ঢেউ কারখানাতে—

তবুও আকাশ ভরে আচমকা আর্তস্বরে:

শত্রু নিহত স্তব্ধ রাতে।

প্রবল পাহাড়ে গোপনে যুদ্ধ সঞ্চারিত

দৃঢ় প্রতিজ্ঞা মুখর গানে,

বিপ্লবী পথে মিলেছে এবার বন্ধু তিতো:

মুক্তির ফৌজ আঘাত হানে।

শত্রু শিবিরে লাগানো আগুনে বাঁধন পোড়ে

—অগ্নি ইসারা জনান্তিকে!

ধ্বংসস্তূপে আজ মুক্তির পতাকা ওড়ে

ভাঙার বন্যা চতুর্দিকে।

নামে বসন্ত, পাইন বনের শাখায় শাখায়

গাঢ়-সংগীত তুষারপাতে,

অযুত জীবন ঘনিষ্ঠ দেহে সামনে তাকায়:

মারণ-অস্ত্র সবল হাতে।

লক্ষ জনতা রক্তে শপথ রচনা করে—

‘আমরা নই তো মৃত্যুভীত,

তৈরী আমরা; যুগোশ্লাভের প্রতিটি ঘরে

তুমি আছ জানি বন্ধু তিতো।’

তোমার সেনানী পথে প্রান্তরে দোসর খোঁজে:

‘কোথায় কে আছ মুক্তিকামী?’

ক্ষিপ্ত করেছে তোমার সে ডাক আমাকেও যে

তাইতো তোমার পেছনে আমি॥

সূত্রনির্দেশ ও টীকা

  1. ‘মার্শাল তিতোর প্রতি’ কবিতাটির রচনাকাল আনুমানিক ১৯৪৬।